হার্ডি - রামানুজন নম্বর --1729
শ্রীনিবাস রামানুজন (২২ ডিসেম্বর, ১৮৮৭ – ২৬ এপ্রিল, ১৯২০) অসামান্য প্রতিভাবান একজন ভারতীয় গণিতবিদ। তিনি গণিতের বিভিন্ন শাখায়, বিশেষ করে গাণিতিক বিশ্লেষণ, সংখ্যাতত্ত্ব, অসীম ধারা ও আবৃত্ত ভগ্নাংশ শাখায়, গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার রেখে যাওয়া নোটবুক বা ডায়েরি হতে পরবর্তীতে আরও অনেক নতুন সমাধান পাওয়া গেছে। অবিভক্ত ভারতের মাদ্রাজের এক গরিব ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান রামানুজন খুব অল্প বয়সে গণিতের সঙ্গে পরিচিত হোন । কুম্বাকোটম সরকারি কলেজে পড়ার জন্য বৃত্তি পেলেও অ-গণিতীয় বিষয়ে ফেল করার কারণে তার বৃত্তি বাতিল হয়ে যায়। এরপর তিনি অন্য একটি কলেজে নিজের গাণিতিক গবেষণা শুরু করেন। এই সময় জীবন ধারণের জন্য তিনি মাদ্রাজ বন্দর ট্রাস্টের মহাহিসাবরক্ষকের কার্যালয়ে কেরানি পদে যোগ দেন।
পরে তার প্রতিভা জি. এইচ. হার্ডির নজরে পরে এবং রামানুজন বিদেশ যান । বিদেশে তিনি গণিত বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন । তিনি বিদেশেই মাত্র 32 বছর বয়সে টিবি রোগে আক্রান্ত হন।সেই সময়ে টিবি রোগ খুব কঠিন রোগ বলে পরিচিত ছিলো।
ঐ দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি যখন হসপিটালে চিকিৎসাধীন ।তখন গণিতবিদ জি. এইচ. হার্ডি রামানুজনের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি যে ট্যাক্সি চেপে গিয়েছিলেন সেই গাড়ির নম্বর ছিল 1729 । হার্ডি ও রামানুজনের মধ্যে কথাবার্তা চলাকালীন হার্ডি আক্ষেপ করে বলেন যে তিনি যেই গাড়িতে আজ চেপে এসেছেন সেই গাড়ির নম্বরটি হলো1729 যা একটি সাধারণ সংখ্যা ।
কিন্তু, রামানুজন শুনেই তৎক্ষণাৎ বলেছিলেন যে 1729 সংখ্যাটি মোটেই সাধারণ সংখ্যা দিনসংখ্যা নয় বরং সেটি একটি বিশেষ সংখ্যা।
কারণ এটি সবচেয়ে ছোটো সংখ্যা যেটি দুইরকম করে দুটি ( ধনাত্মক সংখ্যা) ঘনের সমষ্টি আকারে প্রকাশ করা যায়।
পরে অনেক সংখ্যা আছে যাদের দুই রকমভাবে দুটি ঘনের সমষ্টি আকারে প্রকাশ করা যায়। কিন্তু
1729 ছিল সবচেয়ে ছোটো সংখ্যা যা দুইরকম ভাবে দুটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার ঘনের সমষ্টি।
রামনুজনের ঐ জটিল রোগে আক্রান্ত অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও গণিতের প্রতি এতো অনুরাগ দেখে গণিতজ্ঞ হার্ডি অবাক হন।
তিনি খুব অল্প বয়সে পরলোক গমন করেন যা ভারত তথা বিশ্ববাসীর কাছে গণিতক্ষেত্রে বিরাট নক্ষত্রপতন । বর্তমানে রামানুজনের গণিত চর্চা নিয়ে বিশ্বের বহু জায়গায় গবেষণা চলছে।
Help full
উত্তরমুছুন